Pregnancy

Pregnancy Symptoms

pregnancy

গর্ভধারণ যে কোনো নারীর জন্যই অতি সুখকর অনুভূতি। গর্ভধারণের বা Pregnancy Symptoms এর চেষ্টা করার পর শেষ ২ সপ্তাহ অপেক্ষা করা যেন অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে যায়। গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন এমন নারীরা চায় পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে সে গর্ভধারণ করেছে কিনা এ ব্যাপারে সম্পর্কে জানতে। তবে সাধারণত শরীরে আমাদেরকে আগে থেকেই জানান দিয়ে থাকে যে একজন নারী গর্ভধারণ করেছে। আজকে আমি আপনাদেরকে Pregnancy Symptoms বা গর্ভধারণের এমন ১২ টি লক্ষণ সম্পর্কে বলব যে লক্ষণগুলো যদি আপনি আপনার শরীরে দেখতে পান। তাহলে অবশ্যই পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি মা হতে চলেছেন। তবে এই ১২ টি লক্ষণ এর মধ্যে সবগুলো-লক্ষন ই যে একজন নারীর মধ্যে দেখা দেবে তা কিন্তু নয়।

হতে পারে সবগুলো লক্ষণ দেখা দিল, হতে পারে একটি বা দুটি লক্ষণ দেখা দিলো, কারণ নারী ভেদে শরীর আলাদা। আবার এমনও হতে পারে শরীরে একটিও লক্ষণ নেই তারপরও সে গর্ভবতী তবে এমনটা সাধারনত খুব কম হয়। এই ১২ টি লক্ষণ এর মধ্যে ১টি ২ টি অথবা সবগুলো ই থাকতে পারে আপনার শরীরে। গর্ভধারণের একটি প্রধান লক্ষণ পিরিয়ড মিস হওয়া, তবে পিরিয়ড মিস হওয়ার আগেই জেনে নিন আপনি গর্ভধারণ করেছেন কিনা।

ক্রাম্পিং

প্রথম যে লক্ষণটির কথা বলছি তা হচ্ছে ক্রাম্পিং বা পেট আঁকড়ে ধরা: Pregnancy এর শুরুর দিকে একটি কমন উপসর্গ। ব্যথা বা মিতু ব্যথা হতে পারে এ ব্যথা টা অনেক সময় পিরিয়ডের সময় নারীরা যে ব্যথা অনুভব করে সে ব্যথার মতো, তাই অনেকেই পিরিওড হবে মনে করে ভুল করেন। কিন্তু এটা আসলে গর্ভধারণের প্রাথমিক একটি লক্ষণ, বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রেই এই লক্ষণটি দেখা যায়।

ইমপ্লান্টেশন ব্লিডিং

দুই নাম্বারে যে লক্ষণের কথা বলব তা হচ্ছে ইমপ্লান্টেশন ব্লিডিং: সাধারণত গর্ভে বাচ্চা স্থাপন হওয়ার পর সামান্য একটু রক্তপাত হতে পারে। সেটা হতে পারে এক থেকে দুই ঘন্টা কিংবা এক দিন এর বেশি নয়। এই রক্তের রং হালকা গোলাপী বাদামি অথবা খয়রি হতে পারে , তবে রক্তের ধারা খুবই কম থাকবে। অনেকেই এটা ভেবে ভুল করেন যে তার পিরিয়ড হয়ে গিয়েছে কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারেন যে তিনি সন্তান সম্ভবা। পিরিওডের বিল্ডিং এর সাথে ইমপ্লান্টেশন ব্লিডিং এর পার্থক্য রয়েছে, সাধারণত পিরিয়ডে ব্লিডিং রক্তের মতো লাল হয়। যেটা ইম্প্লান্টেশনে হয়না।

ক্লান্তি

তিন নাম্বার সিমটমটি হচ্ছে ক্লান্তি বা অবসাদ আসা: ক্লান্তি গর্ভাবস্থায় যে কোন সময় দেখা দিতে পারে , তবে প্রথম দিকে সেটা অত্যন্ত পরিমাণে দেখা দেয় যেহেতু প্রজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা শরীরে অনেক বেশি বেড়ে যায়, সেজন্য আপনাদের ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে, এমনকি তার সাথে অবসাদও দেখা দিতে পারে। তবে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও খাদ্যাভাসে পরিবর্তনের মাধ্যমে এ ক্লান্তি ও অবসাদ কে দূর করা সম্ভব। হঠাৎ করেই যদি আপনার ক্লান্তি ও অবসাদ হচ্ছে , তাহলে বুঝে নিন হয়তো আপনি গর্ভবতী।

মূত্র ত্যাগ

নাম্বার ৪ ঘন ঘন মূত্র ত্যাগ করা: প্রেগনেন্সিতে  হৃদপিণ্ড শরীরে বেশি রক্ত পাম্প করে, যার কারণে কিডনির বেশি পরিমাণে তরল ছাড়তে হয় এবং মূত্রথলিতে সেই অতিরিক্ত তরল এসে জমা হয়, তাই ঘন ঘন মূত্র ত্যাগের বেগ আসে এবং অস্বস্তি দেখা দেয়। এক্ষেত্রে হরমন ও প্রভাব বিস্তার করে থাকে, বিশেষজ্ঞরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ৩০০ মিলি পাণিগ্রহণ এর মত প্রকাশ করেছেন, যার কারণে অনেক সময় ফ্রিকোয়েন্ট উড়িনেশন এর সমস্যায় ভুগতে হয় গর্ভবতী মহিলাদের।

কোষ্ঠকাঠিন্যে

পাঁচ নম্বর লক্ষণটি হচ্ছে পেট ফাঁপা বা কোষ্ঠকাঠিন্যে: পিরিয়ডের লক্ষণ এর মত পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য pregnancy এর শুরুতে দেখা দেয়, হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে পরিপাকতন্ত্রের কার্যকলাপ কিছুটা শিথিল হয়ে যায়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দেয় এবং পেট ফাঁপা অনুভূত হয়, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি আস জাতীয় শাকসবজি ও ফল খেলে কিছুটা উপকার পাওয়া যেতে পারে।

শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকা

নাম্বার ৬ শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকা শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকা: শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকাও pregnancy এর শুরুর দিকের একটি লক্ষণ , আবহাওয়া ও ব্যায়াম করলে তাপমাত্রা এই আরও বাড়তে পারে , এ সময় বেশি করে পানি পান করতে হবে এবং সাবধানতা অবলম্বন করে ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম করা উচিত। আপনি যদি গর্ভধারণের চেষ্টা করে থাকেন তাহলে এই সময় আপনাকে অধিক পরিমাণে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ আপনার একটি ভুল সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আপনার আর্লি মিসক্যারেজ হয়ে যেতে পারে , যেটা অবশ্যই প্রত্যেকের জন্য অনেক বেশি দুঃখজনক হবে।

মর্নিং সিকনেস

সাত নম্বর লক্ষণটি হচ্ছে মর্নিং সিকনেস বমি বমি ভাব এবং বমি (প্রেগনেন্সিতে) এইলক্ষণটি নারীদের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে লক্ষ্য করা যায় , বমি বমি ভাব – মর্নিং সিকনেস সাধারণত চার থেকে ছয় সপ্তাহে শুরু হতে দেখা যায়, এর নাম মর্নিং সিকনেস তবে এটা সারা দিনের যেকোনো সময় লক্ষ্য করা যেতে পারে। হরমোনের প্রভাব থাকলেও এর আসল কারণ এখনো অজানা, প্রেগন্যান্সির প্রথম তিন মাসে অনেক মহিলা-ই এই  মর্নিং সিকনেস এ ভুগে থাকেন। ধীরে ধীরে সেটা তীব্র হতে পারে pregnancy এর শেষের দিকে, অনেকের আবার সময়ের সাথে সাথে এর তীব্রতা কমতেও দেখা যায় , নোনতা ক্র্যাকার্স এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও রেহাই দিতে পারে, তবে সব নারীর ক্ষেত্রে মর্নিং সিকনেস লক্ষ্য করা যায় না। সাধারণত ১০০ জন গর্ভবতী নারীর মধ্যে ৩০ জনের মধ্যে মর্নিং সিকনেস লক্ষ্য করা যায় না, বাকি ৭০ জনের মধ্যে মর্নিং সিকনেস লক্ষ করা যায়।

স্তনে ব্যথা

৮ নাম্বার লক্ষণটি হচ্ছে স্তনে ব্যথা অনুভূত হওয়া: ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের দিকে স্তনে হালকা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। হরমোনাল পরিবর্তনের কারণেই এটি হয়ে থাকে, অনেক সময় এ ব্যাথা বা অসস্তি কর অনুভূতি ১১ সপ্তাহের ও হতে পারে, আরামদায়ক ড্রেস নারীদেরকে আরাম দিতে পারে।

রক্তচাপ

৯ নম্বর লক্ষণটি হচ্ছে রক্তচাপ এবং মাথা ঘোরা: (প্রেগনেন্সির) শুরুর দিকের ধাপগুলোতে রক্তচাপ নেমে যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর ফলে মাথা ঘুরে। রক্তচাপ ও মাথা ঘোরা গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ গুলোর মধ্যে অন্যতম, যার ফলে শরীর অনেক দুর্বল লাগে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে, এবং অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকা যাবেনা।

খাবারে অনীহা

১০ নম্বরের লক্ষণটি হচ্ছে খাবারে অনীহা ও গন্ধ লাগা: খাবারে গন্ধ লাগার অভিযোগ অনেক গর্ভবতী নারী , গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে করে থাকেন যদিও গবেষণাগুলো খুব একটা ভিত্তি খুঁজে পাইনি এই অভিযোগের ওপরে, তবে এই অনুভূতি থেকেই বমি ভাব লাগতে পারে, তবে গবেষকদের মতে মহিলাদের এ ধরনের অনুভূতি প্রথম মাসেই বেশি দেখা যায়। হঠাৎ করেই দেখা যায় কোন খাবার আপনার অনেক ভালো লাগতে শুরু করেছে যেটা আপনার আগে কখনই ভাল লাগত না, আবার আপনার সবচেয়ে প্রিয় খাবারটি আপনার একদমই সহ্য হচ্ছে না, যার গন্ধে আপনার বমি পাচ্ছে ,যদি গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে আপনি এমন লক্ষণ বুঝতে পারেন পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে আপনি বুঝে নেবেন আপনি মা হতে চলেছেন।

হৃদপিন্ডের দ্রুত হার

১১ নাম্বার লক্ষণটি হচ্ছে হৃদপিন্ডের দ্রুত হার: সাধারণত গর্ভধারণের পর নারীদের হৃদপিন্ডের হার দ্রুত হয়ে যায় আবার ৮ থেকে ১০ সপ্তাহের দিকে আপনার হৃদপিন্ডের গতি দ্রুত হয়ে থাকে, এটি গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ এর সাথে বুক ধড়পড় ও হতে পারে, হরমোনের তারতম্যের কারণে এমনটি হয়ে থাকে।

মুড সুইং

সর্বশেষ যে লক্ষণের কথা বলেছি তা হচ্ছে মুড সুইং”: মুড সুইং সাধারণত পিরিয়ডের আগে বা পিরিয়ডের সময় ও হয়ে থাকে, মুড সুইং গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ! গর্ভাবস্থায় মহিলাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, কখনো তারা ফুরফুরে থাকে আবার কখনো চড়া মেজাজে এটাও হরমোনের ই খেলা। তখন দেখা যায় এমন খাবার যা খাওয়ার ই জিনিস নয় তা খেতে ইচ্ছা করে , যখন তখন মেজাজের এই পরিবর্তনকে মুড সুইং বলে, স্বামী বা পরিবারের পর্যাপ্ত সহযোগিতা এ সমস্যা মেটাতে সাহায্য করে থাকে।

তাহলে পাঠক এই লক্ষণগুলোর মধ্যে আপনার কোন লক্ষণ টি আছে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না , আপনি যদি একজন হবু মা হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে শুরুতেই আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি এ লক্ষণগুলোর মধ্যে কয়েকটি লক্ষণ আপনার আছে আর কয়টি লক্ষণ আপনার নেই অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আর পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে শেয়ার করবেন।

আরও জানতে ভিজিট করুন হেল্‌থ টিপস এরিয়া 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *