পেটের চর্বি কমানোর ব্যায়াম (belly fat loss exercise)
ব্যবসা বা চাকুরী করতে গেলে যেটা সবচেয়ে জরুরী সেটা হল নিজেকে ফিট রাখা, সেই ফিট রাখার ওপরেই থাকছে আজকের পোস্টটি, আজ থাকছে-
- ১) পেটের চর্বি কমানোর সহজ ব্যায়াম
- ২) পেটের চর্বি কমানোর সহজ উপায়
- ৩) পেটের চর্বি কমাতে প্রতিদিন যা খাবেন
পেটে চর্বি জমা বা ভুড়ি বাড়ার সমস্যা নিয়ে বিব্রত অনেকেই শুধু তাই নয় পেটে চর্বি জমার সরাসরি হৃদরোগ ডায়াবেটিস উচ্চরক্তচাপ কোলন ক্যান্সার ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত। শরীরের মধ্যভাগে চর্বি বেশি থাকলে বলা হয় অ্যাপেল , অ্যাপেল সেপের বডি যা অতিরিক্ত বিএমআই এর চেয়েও বেশি ক্ষতিকর। পেটের চর্বি মূলত ভিসেরাল ফ্যাট এই থেকে বিপাক ক্রিয়ায় নানা জটিলতা ঘটে। রক্তনালীতে চর্বি জমে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হয়। পেটে চর্বি বা ভুড়ি কমানোর জন্য খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি ব্যায়াম ও দরকার আসুন জেনে নেই কিভাবে এটা কমানো যায়।
মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার বাদ দিন যেমন- কোমলপানীয়, চিনিযুক্ত খাবার, কেক ,চকোলেট ইত্যাদি। আমিষ জাতীয় খাবার আঁশযুক্ত খাবার বেশি করে খান ,সবুজ শাকসবজি তাজা ফলমূল খেতে হবে বেশি বেশি করে। ডায়েট পরিশ্রমের পরিমাণ বাড়ান , নিয়মিত হাঁটুন এ ছাড়া পেটের চর্বি কমানোর জন্য নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম করতে পারেন।
১) বিস্ক ওয়াকিং
প্রথমে ধীরে ধীরে এক মিনিট হাটুন, তারপর গতি বাড়িয়ে জোরে ৩০ সেকেন্ড হাটুন ,আবার ধীরে এক মিনিট হাঁটুন ,আবার জোরে ৩০ সেকেন্ড, এভাবে ৫ থেকে ১০ মিনিট হাঁটুন।
২) জগিং
প্রথমে এক মিনিট জগিং তারপর ৩০ সেকেন্ড দৌড়ানো তারপর আবার এক মিনিট জগিং ও ৩০ সেকেন্ড দৌড়ানো, এভাবে পাঁচ মিনিট করুন।
৩) ক্রাঞ্চ
মাদুর বা মেটে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন , এবার হাঁটু ভাঁজ করে বুকের কাছে আনতে চেষ্টা করুন। একই সঙ্গে মাথার পেছনে হাত দিয়ে শরীরটাকে উঠিয়ে হাঁটুর কাছাকাছি নিয়ে যান। হাঁটু আর মাথা একসঙ্গে আনার সময় শ্বাস নেবেন, আগের অবস্থানে ফিরে যাওয়ার সময় শ্বাস ছেড়ে দেবেন। দিনে দু বেলা ১০ থেকে ২০ বার করুন,
৪) 90° পা
মেটের ওপর চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন, হাতের তালু মেটের উপর থাকবে। এবার পা দুটো জোড়া করে ৯০ ডিগ্রি উপরে উঠিয়ে দিন। ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। পা সোজা রেখে হাটু ভাজ না করে নামিয়ে আনুন , এটা ১০ থেকে ১৫ বার করুন।
৫) ফ্লাটার কিক
ম্যাটে চিৎ হয়ে শুয়ে হাত দুটো নিচে রাখুন এরপর মাথা কাঁধ ও পা ম্যাট থেকে ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠান। এই অবস্থায় দ্রুত পা দুটো ওঠানামা করুন এটা পাঁচ থেকে দশ বার করুন।
৬) পেটের স্ট্রেচিং
পেটের স্ট্রেচিং চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন , দুই হাত সোজা করে মাথার পেছনে নিয়ে যান টান টান করে, একইসঙ্গে পায়ের পাতা টানটান করে মেঝেতে শুয়ে পড়তে চেষ্টা করুন। পেটের পেশিতে টান অনুভব করবেন , এতে এভাবে ৫ থেকে ১০ মিনিট থাকবেন, শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখবেন।
পেটের চর্বি কমাতে প্রতিদিন যা খাবেন-
ভুড়ি কমাতে চাইলে সকালে যা খাবেন-
বাড়তি ভুঁড়ি শুধু যে সৌন্দর্য নষ্ট করে তা কিন্তু নয় এটি আমাদের শরীরের জন্যও বেশ ক্ষতিকর, নানা অসুখ ডেকে নিয়ে আসতে পারে এই অতিরিক্ত ভুড়ি। ভুড়ি বাড়েলে তা কমানোর জন্য নানা প্রচেষ্টা থাকে আমাদের, অনেকেই না বুঝে না খেয়ে থাকা শুরু করেন ,এতে যে উপকার মিলে তা কিন্তু নয় খাবার খেতে হবে নিয়ম মেনে সে সঙ্গে বাড়তি দূর করতে মেনে চলতে হবে কিছু নিয়মকানুন। প্রতিদিন তিন চারবার খাবার প্রায় সবাই খেয়ে থাকেন, তবে অল্প করে কয়েকবার খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে করা সহজ হবে।
এক্ষেত্রে দিনের শুরুতে কি খাচ্ছেন তা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ,সকালে কোন খাবারগুলো খেলে ভুঁড়ি দ্রুত কমবে চলুন তাহলে এক নজরে জেনে নেওয়া যাক।
১. মূলত সকালের খাবার থেকেই আমরা সারাদিনের শক্তি টা পাই যে কারণে এটি ভারী হলেও তেমন কোন ক্ষতি নেই , সকালের খাবার অবশ্যই ফাইবার যুক্ত খাবার রাখুন যা ফ্যাট কমানোর ক্ষেত্রে দারুন কার্যকরী।
২. পুষ্টিবিদরা বলেছেন হাই প্রোটিন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে , এমনকি ক্যালরি যারাতে ও সাহায্য করে থাকে এই প্রোটিন, শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখে তাই সকালের খাবারে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখাটা ভীষণ জরুরী।
৩. অনেকেই সকাল সকাল উঠে উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খেয়ে পেট ভরে থাকেন, তবে উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার সকালে না খাওয়াই ভাল, সকালে চা বা কফি যেটাই পান করেন না কেন চিনি মেশাবেন না।
৪. চিনি মিশিয়ে খেলে তা স্বাস্থ্যকর খাবার থেকেও সঠিক পুষ্টি পাবে না বরং ভুড়ি আরো বেড়ে যাবে প্যান কেক, পেস্ট্রি ,এসব খাওয়ার অভ্যাস বাদ রাখুন সকালের খাবারের তালিকা থেকে।
৫. প্রসেসড খাবার এড়িয়ে যাওয়া এমনিতেই বুদ্ধিমানের কাজ, আর সকালে তো একেবারেই খাবেন না অনেকেই সকালের খাবারের প্রসেস জুস পান করে থাকেন কিন্তু এতে উপকার থেকে অপকার টাই বেশি হয়।
৬. পাস্তা বা হাতে গড়া আটার রুটি খান সকালের নাস্তায় এতে হৃদযন্ত্র ভালো থাকবে সে সঙ্গে কমবে ভুড়িও। ঘুম থেকে ওঠা এবং সকালের খাবার খাওয়ার মধ্যে খুব বেশি সময়ের ব্যবধান রাখবেন না।
৭. চেষ্টা করুন ঘুম থেকে ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যেই সকালের খাবার খেতে , দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকলে ভুড়ি আরো বাড়বে সকালে পেট ভরে খান এরপর সারাদিন অল্প অল্প করে চার-পাঁচবার খান সেইসঙ্গে পরিমাণ মতো পানি তো পান করবেন ই।
৮. প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমান এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন সেসঙ্গে শরীরচর্চায় মনোযোগী হন অতিরিক্ত ভুড়ি দূর হবে দ্রুত।
পেটের চর্বি কমানোর সহজ উপায়-
খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম এবং ব্যস্ত জীবনযাত্রা ফলে নারী-পুরুষ উভয়ের জীবনযাত্রার চিত্র পাল্টে যাচ্ছে, জাঙ্ক ফুডের বদভ্যাস আর খাওয়ার অনিয়মের কারণে শরীরের জমছে বাড়তি ফ্যাক্ট এবং চর্বি এতে চাপ সৃষ্টি হয় নানান রোগ ,এই নিয়ে বিপদে পড়ে থাকেন সবাই, একটু সচেতন হলে আমরা এই বিপদ থেকে রেহাই পেতে পারি সহজেই।
পেটের মেদ আর শরীরের অন্য অংশের মেদকে একজিনিস ভাবলে ভুল করবেন। পেটের মেদ যেহেতু লিভার কিডনি এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গের সঙ্গে লেগে থাকে তাই এটি আপনার জন্য অনেক বড় বিপদ। এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। শুধু ব্যায়াম করলেই পেটের মেদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। খাবার দাবারেও সতর্ক থাকতে হবে, খাবারের সর্তকতা এবং শরীরের বিশেষ কয়েকটি ব্যায়াম আপনার পেটের চর্বিকে কমিয়ে দিবে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের চর্বি জমা থেকে আপনাকে মুক্ত রাখবে।
প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে লেবু ও একটু লবণ দিয়ে শরবত তৈরি করে খাবেন, শরবতটি খাওয়ার পর দুই বা তিন কোয়া কাঁচা রসুন খেলে ভাল ফল পাবেন। তাহলে আপনার শরীরের ওজন কমানোর প্রক্রিয়িাটি দ্বিগুন গতিতে হবে। সকালের নাস্তা তে অন্য খাবার কম খেয়ে একবাটি করে ফল খেলে পেটের চর্বি থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
বয়স ওজন উচ্চতা তিনটা জিনিস এই তিনটা জিনিস কনসিডার করে কিন্তু আমাদেরকে খাবার খেতে হবে। এক্সারসাইজ এর কোন বিকল্প নেই। এখন অনেকেই চিন্তা করতে পারেন কোন ধরনের এক্সারসাইজ করব? আমি বলব যে তাদেরকে শুধুমাত্র প্রতিদিন নিয়ম করে এক থেকে দেড় ঘন্টা হাঁটার জন্য সেই সময়টাকে যদি আপনি ভাগ করে নেন, যাদের অতিরিক্ত ওজন তারা সকালে নাস্তার পর ২০ মিনিট, রাতের খাবারের পর ২০ মিনিট এবং আর্লি মর্নিং আবার ৪৫ টু ৫০ মিনিটের মতো তারা হাঁটতে পারেন। কারণ আপনি যদি সকালের নাস্তার পর হাটেন আপনার ইন্সট্যান্ট তখন ক্যালোরি টা ঝরে গেল।
আবার রাতের খাবারের পর যখন আপনি হাঁটবেন তখনই কিন্তু আপনার খাবারের ক্যালোরিটা বার্ন হয়ে গেল। এটলিস্ট যদি আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন টাইমে ২০ মিনিটস করে আমরা ভাগ করে নিই তাহলে কিন্তু আমাদের এই বাড়তি ক্যালোরি টা চলে যায়।
অনেকে মনে করেন যে বেলি স্ট্রোক করলে পেটের মেদ কমে, আসলে বেলি স্ট্রোক বেশি সুন্দর করলেও পেটের মেদ কমাতে খুব একটা কাজে দেয় না। পেটের মেদ কমাতে হলে প্রয়োজন পুরো শারীরিক ব্যায়াম প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ মিনিটের জগিং রক্তে চলমান ফ্যাট চর্বি কে ধ্বংস করে দেহে সঞ্চিত ফ্যাট ভাঙতে সাহায্য করে। নিয়মিত পরিকল্পনামাফিক ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন করলেই শুধু পেটের মেদই না সারা দেহের মেদ কমে গিয়ে সুন্দর ফিগার তৈরি হবে এবং সাথে সাথে সুন্দর ও সুস্থ জীবন কাটাতে পারবেন আপনি।
এই ছিল আজকের পোস্ট। সামনে আরো নতুন নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হবো আমরা, আশা করছি এই পোস্টটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। যারা সহজে পেটের মেদ কমাতে চান এই পোস্টটি নিশ্চয়ই তাদের উপকারে আসবে। যদি এই পোস্টটি আপনাকে একটুও অনুপ্রাণিত করে তবেই আমাদের চেষ্টা সফল হবে। এই এই পোস্টটি আপনার কাছে কেমন লেগেছে কমেন্ট করে আমাদের জানান, যদি মনে হয় এই পোস্টটি অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে ,তবে অবশ্যই শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন। সবাই ভাল থাকবেন খোদা হাফেজ।
আরও জানতে ভিজিট করুন হেল্থ টিপস এরিয়া ।