Hair Fall Solution

স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য চুলের যত্নের(hair care)রুটিন

hair care

আপনার প্রচুর পরিমাণ চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও যদি আপনার চুলগুলি অস্বাস্থ্যকর দেখায় তবে কিন্তু আপনার চুলের যত্নের (hair care) রুটিন পরিবর্তন করার সময় চলে এসেছে। আরেকটি কথা আপনি কিন্তু চাইলেই শুধুমাত্র একটি রুটিন আপনার চুলের জন্য গ্রহণ করতে পারবেন না , কারণ এটি আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী কাজ নাও করতে পারে। আর তাই এটি আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী কাস্টমাইজ করতে হবে। তাহলে এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি কীভাবে আপনার চুলের জন্য এই রুটিন তৈরি করবেন?

চিন্তা করবেন না আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেন-

  • ১. গরমকালে চুলের কিভাবে যত্ন(hair care) নিবেন এবং প্রতিদিনের রুটিন
  • ২. শীতকালে কিভাবে চুলের যত্ন নিবেন এবং প্রতিদিনের রুটিন
  • ৩. চুলের সঠিকভাবে যত্ন নিতে যে খাবারগুলি খেতে হয়

তাই আপনি যদি আপনার চুলের ১০০% সঠিক যত্ন নিতে চান তাহলে, পোস্টটি নিশ্চয়ই আপনার জন্য অনেক উপকারে আসবে আশা করছি।

গরম কালে চুলের যত্ন নিতে নিচের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস জেনে রাখুন-

শুধু ত্বকের যত্ন নিচ্ছেন? চুলের কথা ভুলে গেলে চলবে? গরমের ত্বকের পাশাপাশি চুলেরও যত্ন নিতে হবে। অত্যাধিক সূর্যের রশ্মি চুলের মেলানিল নষ্ট করে দেয় , তাতে কিউটিকলের ক্ষতি হয়ে চুল ঘাসের মতো রুক্ষ হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে চুলের আগাও ফাটে কিভাবে চুলকে সুরক্ষিত রাখবেন তার কিছু টিপস দেখে নিন।

১) চুল বাঁচাতে বাজারে নানান ধরনের প্রসাধনী পাওয়া যায়, এগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্রিম ,লোশন,জেল, এমনকি পাউডার উন্নত মানের এক্সপিএস থার্টি প্লাস সমৃদ্ধ হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার চুলকে রোগের হাত থেকে বাঁচাতে পারে।

২) গরমকালে খুব বেশি শ্যাম্পু ব্যবহার করা ঠিক নয়, প্রয়োজন হলে প্রতিদিন শ্যাম্পু ব্যবহার না করে কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুল ধোয়া যেতে পারে।

৩) চুল সুস্থ রাখতে সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পান করাও জরুরি, এছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার অর্থাৎ কমপক্ষে ৪-৫ এ ধরনের রঙিন সবজি ও ফল খাবারের তালিকায় রাখতে হবে পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ পালং শাক ডিম খাওয়া উচিত।

৪) রোদে বের হওয়ার আগে তাজা অ্যালোভেরা জেল এর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে চুল আঁচড়ে নিন এটা চুল কিতাব থেকে রক্ষা করে সেই সাথে বরসাদ বিশিষ্ট টুপি ব্যবহার চুলকে সূর্যালোক ও বাড়তি তাপ থেকে সুরক্ষিত রাখে।

৫) এছাড়াও পাকা কলার সাথে মধু মিশিয়ে কিংবা তৈলাক্ত চুলে ডিমের সাদা অংশ দিয়েও তৈরি করা যেতে পারে বিভিন্ন হেয়ার প্যাক।

তবে মনে রাখতে হবে হেয়ার স্ট্রেইটনার ও হেয়ার কালারের মত স্টাইলিং যন্ত্র যতটা কম ব্যবহার করা যায় ততই ভালো, এসব যে কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে গরমকালেও চুল রাখুন ঝলমলে।

এবার চলুন জেনে নিই কিভাবে শীতকালে চুলের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়

শীতের মৌসুমে চুল পড়া নিয়ে আমাদের নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় , অথচ সামান্য সচেতনতা ও যত্ন নিলে আমাদের চুল থাকবে মসৃণ সুন্দর ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। এখন আমরা কথা বলব শীতের মৌসুমে ও খুব সহজে কিভাবে চুলের যত্ন (hair care) নিবেন।

শীতকালে বাতাস শুষ্ক থাকার কারণে আমাদের চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায় । পাশাপাশি বাইরের ধুলোবালির প্রভাব ও পড়ে চুলের ওপর ফলে খুশকি থেকে শুরু করে চুলের নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। তবে সাবধান হলে এসব সমস্যা থেকে নিজেকে দূরে রাখা সম্ভব, চলুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক শীতের মৌসুমে চুল সুস্থ ও সুন্দর রাখায় আমাদের করণীয়।

১) সপ্তাহে তিনদিন গরম তেল দিয়ে চুল এর ভিতর ও মাথার তালু মাসাজ করুন। মাসাজের ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন, এই মাসাজ চুল দ্রুত বাড়তে সাহায্য করে।

২) শীতে অনেকেরই চুল পড়তে দেখা যায় এই চুল পড়া রোধে তেল ও castor-oil একসাথে হালকা গরম করে নিন, ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তাতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে অথবা ডিমের কুসুম মিশিয়ে চুলে লাগান, এতে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।

৩) চুলের ডগা ফেটে গেলে চলব হয়ে যায় এবং চুল বাড়তে সমস্যা হয় ফলে চুলের ওই অংশ কেটে বাদ দিলে চুলের বৃদ্ধিতে কোনো বাধা থাকবে না , এছাড়া চুলের নিচের অংশ অল্প করে কেটে নিলে চুলের ডগা ভালো থাকবে।

৪) শীতে বেশিরভাগ মানুষের চুল রুক্ষ আর শুষ্ক হয়ে পড়ে তাই রুক্ষ এবং নিষ্প্রাণ চুলের জন্য আধা কাপ পালংশাক ১ চা চামচ মধু এবং ১ চা চামচ অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল নিয়ে ব্লেন্ডারে ভালো করে ব্লেন্ড করুন, এরপর এই মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করুন, এর ফলে চুলে সিল্কি ভাব আসবে এবং চুল হবে মসৃণ ও প্রাণবন্ত।

৫) রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ভালো করে চিরুনি দিয়ে চুল আছড়ে শুঁয়া দরকার এতে মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল ভালো হয়, মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়লে চুল পড়া কমবে এবং চুলের গোড়া মজবুত হবে।

৬) খুশকির সমস্যা দূর করতে একমুঠো জবা পাতা আর সমপরিমাণ মেহেদি পাতা পেস্ট করে নিয়ে তাতে এক টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চুলে দিতে পারেন, ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

৭) সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিনের বেশি শ্যাম্পু করা উচিত নয় ঘনঘন শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে চুল শুষ্ক হয়ে যায়। এছাড়া কেমিক্যাল ছাড়া মাইল শ্যাম্পু ব্যবহার করাটাই চুলের জন্য ভালো।

৮) চুলে সূর্যের আলো লাগান , কেননা সূর্য থেকে প্রাপ্ত ভিটামিনটি চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে একই সঙ্গে এটি মাথায় রক্ত চলাচলে উন্নতি ঘটায় এছাড়া চুলের এই চক্রগুলো পাশাপাশি খান সুষম খাদ্য ও প্রচুর পরিমাণে পানি।

চুলের সঠিকভাবে যত্ন(hair care)নিতে যে খাবারগুলি খেতে হয়

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষ সৃষ্টি করেছেন এবং তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য মানুষের মাথায় চুল দান করেছেন, চুল আল্লাহতালার এক বড় নেয়ামত। আর এখন আমার চুল ভালো রাখার কিছু পদ্ধতি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। চুল খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস কারণ এই চুল চেহারার সৌন্দর্য বাড়ায় আমাদের অবহেলার কারণে অল্প বয়সে অতিরিক্ত চুল উঠে যায়। যার কারণে মাথার চুল একেবারে পাতলা হয়ে যায় আর অল্প বয়সের মাথার চুল পাতলা হয়ে গেলে বা টাক পড়ে গেলে অনেক বয়স্ক দেখায়। তাই আমাদেরকে চুলের যত্ন নিতে হবে যাতে করে দীর্ঘদিন চুল ঘন ও সুন্দর থাকে।

বর্তমানে লক্ষ্য করলে দেখা যায় প্রায় ৯০% মানুষ চুলের সমস্যায় ভুগছেন, পূর্বের মানুষ চুলের সমস্যায় এত পরিমাণে ভুক্তভোগী ছিলনা কারণ পূর্বে এত কেমিক্যালযুক্ত তেল শ্যাম্পু সাবান ইত্যাদি ছিল না। মানুষ খাঁটি সরিষার তেল নারিকেল তেল যাইতুন তেলের ইত্যাদি ব্যবহার করত , কেমিক্যালযুক্ত শ্যাম্পু সাবান ইত্যাদি ব্যবহার করা কম করতে হবে এবং চুল পড়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রচুর সুন্দর ও ঘন রাখতে ন্যাচারাল বা প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি তেল ও শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি কিছু এমন খাবার খেতে হবে যা চুলের জন্য খুবই উপকারী।

চুল যদি শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগাড় করতে না পারে তাহলে মাথায় কেবল তেল মেখে আর শ্যাম্পু করে চুল ঠিক রাখা যাবে না বা চুল পড়ার হাত থেকে বাঁচা যাবে না, চুল পড়া ঠেকানো এবং সুস্থ-সবল তরতাজা চুলের জন্য মাথায় তেল ব্যবহার করতে হবে এবং কিছু খাবার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে হবে। খাবারগুলো শরীর সুস্থ সবল রাখতে এবং চুলকে ভেতর থেকে মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে সে সমস্ত খাবারের মধ্যে চুলের জন্য সবথেকে বেশি উপকারী পাঁচটি খাবারের কথা আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব, আজেবাজে খাবার বাদ দিয়ে এই খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় যুক্ত করার চেষ্টা করুন শরীর ভালো থাকবে এবং চুল ও ঠিক থাকবে ইনশাআল্লাহ।

১) পালংশাক

ভিটামিন ও নানা খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ পালং শাক এই শাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড আছে কেবল পালংশাকে নয় এমন নানা রকম শাক সবজি আছে যা চুলের (hair care) জন্য খুবই উপকারী।

২) ডিম

ডিমের পুষ্টি উপাদান দুইভাবে চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করতে পারে ,শরীরের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি চুলকেও পুষ্টি যোগায় চুলের যত্নে ডিম খুবই উপকারী, খাদ্য তালিকায় সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন সেদ্ধ ডিম খাওয়ার চেষ্টা করুন পাশাপাশি প্রতি মাসে দুই থেকে তিন দিন কাঁচা ডিম ভালো ক্রিম মিক্স করে চুলে লাগান।

৩) প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ গাজর

প্রাপ্যতা অনুযায়ী খাদ্য তালিকায় রাখুন চুলের বৃদ্ধি তে দারুন উপকারী গাজরের এই ভিটামিন মাথার ত্বকে শিভম নামের একটি তৈলাক্ত রাসায়নিক উৎপাদনে সাহায্য করে, এটা চুলের গোড়ার সহিংসতা রোধে উপকারী। গাজর কাঁচা খেতে পারেন বা বিভিন্নভাবে রান্না করেও খেতে পারেন।

৪) বাদাম

নানা ধরনের বাদামে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান এবং তেল যা তক মস্তিষ্ক ও হৃদপিন্ডের জন্য দারুন উপকারী, প্রতিদিন হালকা পরিমাণে বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন।

৫) মাছ

খাবার তালিকায় মাছ রাখুন কাছে থাকা ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যা চুলের জন্যও বেশ উপকারী ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড আমাদের চুলের গোড়া মজবুত করতে সহায়তা করে এবং চুল পড়া রোধ করে। চুল সুস্থ (hair care)রাখতে এই খাবারগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এছাড়া প্রত্যেকটা শাকসবজি শরীরের জন্য খুবই উপকারী মাথায় যে সমস্ত তেল ব্যবহার করলে আপনি বেশি উপকার পাবেন তাহলোঃ অরিজিনাল নারিকেল তেল ,সরিষার তেল, অথবা পেঁয়াজের তেল এইগুলো একটু ফলো করলে আপনার চুল ভালো (hair care) থাকবে দীর্ঘদিন ইনশাআল্লাহ। আপনি যে তেল ব্যবহার করুন না কেন পাশাপাশি সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন জাইতুন তেল ব্যবহার করুন। আমাদের প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাইতুন খেতে বলেছেন এবং মালিশ করতে বলেছেন, আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বলেছেন, তার মানে তেলের গুরুত্ব অনেক বেশি তাই মাথায় মালিশ করলে অবশ্যই এর উপকার পাবেন। তবে আপনাদের যাচাই-বাছাই করে অরিজিনাল জাইতুন তেল ক্রয় করতে হবে।

 

তো ভিউয়ার্স আমাদের আজকের এই পুরো আর্টিকেল আশা করছি আপনার দৈনন্দিন জীবনে অনেক সহায়তা করেছে, এই পোস্টটি ফলো করলে ইনশাল্লাহ আপনার চুল ১০০% সুরক্ষিত থাকবে, কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন, আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ।

 

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *